উইলা ক্যাথার নেব্রাস্কার প্রেইরিতে বেড়ে ওঠা এক শক্তিশালী আমেরিকান লেখক, যার জীবন প্রকৃতি, অভিবাসী মানুষের সংগ্রাম ও শিল্পচেতনায় পূর্ণ ছিল। সাংবাদিকতা থেকে সাহিত্য—সব ক্ষেত্রেই তিনি স্বতন্ত্র কণ্ঠে উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন। তার রচনায় স্মৃতি, প্রান্তর ও মানবমনের গভীরতা অনন্তভাবে প্রতিফলিত।

১. তার আসল নাম ছিল “ওয়াইলোল্লা (Wilella)”। পরবর্তীতে তিনি নামটিকে সংক্ষিপ্ত ও মসৃণ করে রাখেন—উইলা ক্যাথার।

২. নেব্রাস্কার প্রেইরি তার গল্পজগতের প্রাণশক্তি। শৈশবের বিস্তীর্ণ ঘাসভূমি তার কল্পনার নীরব অর্কেস্ট্রা হয়ে ওঠে।

৩. তরুণ বয়সে তিনি ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতেন এবং শারীরবিদ্যার ল্যাবে কাজ করতেন।

৪. যুবক বয়সে তিনি ছোট চুল রাখতেন ও ছেলেদের পোশাক পরতেন। নিজের আরাম ও স্বাধীনতার জন্য—এটাই ছিল তার ব্যক্তিত্বের নীরব ঘোষণা।

৫. তিনি ছিলেন তীক্ষ্ণভাষী সাংবাদিক ও নাট্যসমালোচক। তার রিভিউ মানুষকে একইসঙ্গে মুগ্ধ ও সতর্ক করত।

অপেরা ছিল তার গভীর প্রেম। সুরের ঢেউ তার মধ্যে গল্প হয়ে উঠত—যেমন The Song of the Lark

৭. তিনি ছিলেন অত্যন্ত ব্যক্তিগত জীবনরক্ষাকারী একজন মানুষ। তিনি বলতেন—লেখার কথা বেশি বললে রন্ধনরত কেকের মধ্যে ঠাণ্ডা হাওয়া ঢোকার মতো।

৮. নিজের লেখা চিঠি তিনি নষ্ট করে ফেলতেন। তিনি চাইতেন তার বই-ই তার আসল পরিচয় হয়ে থাকুক।

৯. প্রায় ৪০ বছর তিনি এডিথ লুইসের সঙ্গে বসবাস করেছেন। অনেকে মনে করেন এটি ছিল গভীর ও স্থায়ী সম্পর্ক—সঙ্গ, ভ্রমণ ও সৃষ্টিশীলতার ভাগাভাগি।

১০. ১৯২৩ সালে তিনি পুলিৎজার পুরস্কার পান। উপন্যাস One of Ours—এর জন্য; যদিও তিনি নিজে অন্য কিছু বইকে বেশি ভালোবাসতেন।

১১. তার উপন্যাস My Ántonia আমেরিকান সাহিত্যের সেরা উপন্যাসগুলোর একটি। নিঃশব্দ আবেগে ভরা এই বই পাঠকদের এখনও টানে।

১২. তিনি হাঁটতে হাঁটতে গল্প লিখতেন—মনের ভেতর। তার পায়ের তালই যেন বাক্যগুলোর ছন্দ হতো।

১৩. অভিবাসী নারীরা তাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। তাদের শক্তি, দুঃসাহস ও সহনশীলতা তার গল্পে জীবন্ত হয়ে ওঠে।

১৪. আধুনিকতার জটিল ও তীক্ষ্ণ পরীক্ষাধর্মী স্টাইল তিনি পছন্দ করতেন না। তিনি স্বচ্ছতা, সৌন্দর্য ও আবেগের ভাষাকেই বেছে নিয়েছিলেন।

১৫. লেখার সময় তিনি ছিলেন দুর্গের মতো অপ্রবেশযোগ্য। বন্ধুরাও জানতেন—তার কাজের সময় যেন এক পবিত্র নিবাস।

১৬. তিনি সারা দুনিয়া ভ্রমণ করেছেন—ইউরোপ, নিউইয়র্ক, আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিম। সব জায়গাই তার লেখার রঙে নতুন ছাপ ফেলেছে।

১৭. Death Comes for the Archbishop তার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সৃষ্টি। কাহিনির বদলে আবহই এখানে রাজা—ধূপের ধোঁয়ার মতো মগ্ন করা।

১৮. আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিম মরুভূমিকে তিনি অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তার চোখে এটি ছিল এক সম্পূর্ণ অন্যরকম, প্রায় গ্রহ-সদৃশ জগৎ।

১৯. তাকে “আঞ্চলিক লেখক” বলা তিনি পছন্দ করতেন না। তার বিশ্বাস—বিশেষের মধ্যেই সর্বজনীনতা থাকে।

২০. তার সমাধিফলকে রয়েছে My Ántonia-র একটি উক্তি: “এটাই সুখ—নিজেকে কিছু মহান ও পূর্ণ কিছুর মধ্যে বিলীন করে দেওয়া।” এ যেন তার শেষ নীরব বার্তা—প্রেইরির আলোয় মিশে যাওয়া।

উইলা ক্যাথারের ২০টি উল্লেখযোগ্য বই

– O Pioneers! (1913) – The Song of the Lark (1915) – My Ántonia (1918)

– One of Ours (1922) – A Lost Lady (1923) – The Professor’s House (1925)

– My Mortal Enemy (1926) – Death Comes for the Archbishop (1927) – Shadows on the Rock (1931)

– Lucy Gayheart (1935) – Sapphira and the Slave Girl (1940) – Alexander’s Bridge (1912)

– Youth and the Bright Medusa (1920) – Obscure Destinies (1932) – The Troll Garden (1905)

– Not Under Forty (1936) – The Old Beauty and Others (1948) – Stories of the Great Plains (সংকলন

– April Twilights (1903) – কবিতার বই – The Kingdom of Art (প্রবন্ধ ও লেখা সংগ্রহ)