গল্পঃ- মঞ্চ ও মায়াজাল।

আমাদের এই জীবন, একটি ছোট্ট শব্দে বাঁধা—
যেন এক বিশাল মহাকালের রঙ্গমঞ্চে ফেলে যাওয়া এক ঝলমলে আলো।

আর আমরা?
আমরা কেবলই সেই মঞ্চের হাসি-কান্নার সরঞ্জাম—
অনিচ্ছাকৃতভাবে নামা কিছু ক্ষণিকের কুশীলব।

আমার প্রথম উপলব্ধি:
“ভাগ্যের দরজা তারাই খোলে যারা সাহসের চাবি হাতে রাখে।”

আমাদের সবার জীবনে যেমন সুখ–দুঃখ–হাসি–কান্না জড়িয়ে থাকে,
ঠিক তেমনি চলার পথে আমরা হঠাৎই এমন কিছু মানুষের সঙ্গে পরিচিত হই,
যারা ধীরে ধীরে হৃদয়ের কাছে চলে আসে।

আমার ভাবনা:
“মানুষের ভাগ্য তাদের হৃদয়ের সেতুপথে নির্ধারিত হয়,
যেখানে অপ্রত্যাশিত মিলনই সবচেয়ে বড় স্থাপত্য।”

সময় গড়াতে গড়াতে তারা আর ভিন্ন মনে হয় না।
তাদের সান্নিধ্যে মনে হয়—
“আলো যেমন অন্ধকারকে আপন করে নেয়,
তেমনি কিছু সম্পর্ক হৃদয়কে স্থায়ী আশ্রয়ে বেঁধে ফেলে।”

এই মানুষগুলোই হয়ে ওঠে
নিজের অত্যন্ত আপনজন—খুব কাছের মানুষ।

আমার বিশ্বাস:
“জীবনের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার কোনো বৈজ্ঞানিক সূত্র নয়,
বরং হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের শর্তহীন সংযোগ।”

আমরা অজান্তেই হয়ে যাই কিছু স্মৃতির মাঝে চিরকালের জন্য বন্ধি।
আমি বলি—
“স্মৃতি আসলে বন্ধন নয়,
এটি অদৃশ্য সুতো, যা প্রিয়জনদের সাথে আমাদের সেলাই করে রাখে।”

কিন্তু বিধির বিধান বড়ই কঠিন।

আমার দ্বিতীয় উপলব্ধি:
“পরিবর্তন হলো প্রকৃতির একমাত্র স্থায়ী ধর্ম;
আর এই ধর্ম সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নির্মম।”

মধুর সম্পর্কগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।
চলে আসে দূরত্ব,
কমে যায় গভীরতা,
হারিয়ে যায় গুরুত্ব।

আমি দেখেছি—
“গুরুত্ব কমে যাওয়া মানে ভালোবাসার মৃত্যু নয়,
এটি অভ্যস্ততার শীতল আক্রমণ।”

বিশ্বাস আলগা হয়ে যায়,
বুকভরা ভরসা ফসকে যায়।

আমার উপলব্ধি:
“বিশ্বাস কাঁচের মতো—একবার ভাঙলে দাগ অমোচনীয়।”
“ভরসা ভাঙলে ভালোবাসা থাকে না, থাকে কেবল সন্দেহের ছায়া।”

তখন আর থাকে না ভালোবাসা।
থাকে শুধু—
মিথ্যে মায়া,
মিথ্যে আশা।

আমি বলি:
“আশা হলো মানুষের সবচেয়ে বড় আত্মপ্রতারণা—
যা শূন্যতার ওপর প্রাসাদ গড়ে।”

“মায়া হলো সম্পর্কের অবশিষ্ট ছায়া,
যা কেবল অতীতকে তাড়িয়ে বেড়ায়।”

আমার উপলব্ধি:
“অপেক্ষা হলো নীরব যন্ত্রণা,
যা দেয় শুধু শূন্যতার প্রতিশ্রুতি।”

জীবন হলো মাত্র একটি ছোট্ট নাম।
আমরা হলাম সেই জীবনের মঞ্চে
হাসি–কান্নার সরঞ্জাম।

আমার মৌলিক চিন্তা:
“জীবন হলো একটি শূন্য ক্যানভাস; রঙ আমরা লাগাই, কিন্তু তুলি থাকে সময়ের হাতে।”

“এই মঞ্চে কোনো রিটেক নেই;
যা হয়, একবারই হয়।”

আমি মনে করি—
“জীবনের গভীরতা তখনই অনুভব করা যায়,
যখন হারানোর ভয়কে জয় করা শেখা যায়।”

জীবনে অনেক কিছু আসবে, যাবে, হারাবে।

আমার উপলব্ধি:
“ক্ষতির ভয় নয়—যা আছে তাকে সম্পূর্ণভাবে অনুভব করাই জীবনের সার্থকতা।”

তাই মোহ বা স্বার্থের আশা না করে
জীবনের এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে থাকা,
এটাই শ্রেয়।

আমি বলি—
“মোহ হলো বন্ধন; মুক্তি চাইলে আশা ও আসক্তি ত্যাগ করতে হবে।”

“স্বার্থ জীবনের পবিত্রতা নষ্ট করে;
নিঃস্বার্থভাবেই মুক্তির পথ।”

জীবন মানেই সংগ্রাম,
জীবন মানেই যুদ্ধ।

আমার পঞ্চম উপলব্ধি:
“শান্তি হলো বিভ্রম; জীবন হলো নিরন্তর রণক্ষেত্র—
যেখানে প্রতিমুহূর্তে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়।”

“প্রতিটি সংগ্রাম হলো অদৃশ্য দেয়াল ভাঙা—
যা আমাদের নিজেদের ভয় দিয়ে তৈরি।”

একজন প্রকৃত যোদ্ধা লড়ে শেষ পর্যন্ত।
তার লড়াই ফলাফলের জন্য নয়—
মর্যাদার জন্য।

আমার বিশ্বাস:
“ব্যর্থতা সাময়িক বিরতি;
কিন্তু লড়ে না যাওয়া চিরস্থায়ী পরাজয়।”

“আত্মনিয়ন্ত্রণই যোদ্ধার সেরা অস্ত্র।”

“ভবিষ্যৎকে অনুমান নয়—
পদক্ষেপ দিয়ে নির্মাণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।”

জীবনের এই মঞ্চে আমরা ক্ষণিকের অতিথি।
মায়াজাল ছিঁড়ুক বা না ছিঁড়ুক—

“দুঃখকে করো শিক্ষক,
সুখকে করো সহযাত্রী—
তবেই জীবন হবে উপভোগ্য।”

আমাদের ভূমিকা শুধু উপলব্ধি করা নয়—
লড়ে যাওয়া।

কারণ—
“আসল জয় হলো টিকে থাকা;
শেষ পর্যন্ত লড়াই করলেই ইতিহাস নাম লেখায়।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top