“The Elements of Style” by William Strunk Jr. and E.B. White
দ্য এলিমেন্টস অব স্টাইল একটি সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী নির্দেশিকা যা স্পষ্ট এবং কার্যকর লেখার জন্য অপরিহার্য। উইলিয়াম স্ট্রাঙ্ক জুনিয়র দ্বারা লিখিত এবং পরবর্তীতে ই.বি. হোয়াইট দ্বারা সংশোধিত এই বইটি লেখক, সম্পাদক এবং ছাত্রদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়েছে। এর স্থায়ী আকর্ষণ এর সরল, সরাসরি লেখার নিয়মাবলী এবং কৌশল নিয়ে আলোচনা করার পদ্ধতিতে নিহিত।
প্রধান থিম এবং নির্দেশিকা
১. ব্যবহারের নিয়মাবলী
- ব্যাকরণে স্বচ্ছতা: বইটি শুরু হয় এমন কিছু নিয়মের মাধ্যমে যা ব্যাকরণ, পাংচুয়েশন এবং বাক্য গঠনের উপর আলোকপাত করে। এই নিয়মগুলি লেখকদের সাধারণ ভুল থেকে বিরত থাকতে এবং তাদের লেখা স্পষ্ট ও বোধগম্য করতে সহায়তা করে।
- সংক্ষিপ্ততা: প্রতিটি শব্দের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকা উচিত—যা লেখাকে শক্তিশালী ও সরাসরি করে তোলে, এই ধারণাটিই এখানে গুরুত্ব পায়।
২. রচনা কৌশল
- সক্রিয় কণ্ঠস্বর: একটি অন্যতম সুপারিশ হলো সক্রিয় কণ্ঠস্বর ব্যবহারের, যা লেখায় প্রাণ এবং স্পষ্টতা আনে। সক্রিয় বাক্য গঠন সাধারণত পাঠকে আরও সরাসরি ও আকর্ষণীয় করে তোলে।
- যুক্তিসঙ্গত গঠন: লেখার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে লেখককে পরামর্শ দেওয়া হয় কিভাবে বাক্য ও অনুচ্ছেদের মধ্যে যুক্তি ও ধারণাগুলি সুগঠিতভাবে সাজানো যায়।
৩. স্টাইল এবং স্বচ্ছতা
- “অপ্রয়োজনীয় শব্দ বাদ দিন”: বইটির সবচেয়ে বিখ্যাত উপদেশগুলির মধ্যে একটি। এই নীতিটি লেখাকে পরিস্কার করতে ও মূল বার্তাটি প্রকাশ করতে অপ্রয়োজনীয় শব্দগুলো সরিয়ে ফেলার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
- জটিলতার চেয়ে সরলতা: লেখকরা সরল ভাষার পক্ষে ছিলেন এবং জটিল শব্দগুচ্ছ বা অপ্রয়োজনীয় বিশদ বিবরণের ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সরলতা হলো কার্যকর যোগাযোগের মূল চাবিকাঠি।
৪. ফর্মের বিষয়
- উপস্থাপনা এবং পাঠযোগ্যতা: ব্যাকরণ ও স্টাইলের পাশাপাশি, বইটি টেক্সটের ভিজ্যুয়াল বিন্যাস যেমন অনুচ্ছেদ বিন্যাস এবং অন্যান্য উপস্থাপনাগত দিকগুলির বিষয়েও আলোকপাত করে। ভাল বিন্যাস পাঠকের জন্য টেক্সটটি পড়া সহজ করে তোলে।
- নিয়ম ও সৃজনশীলতার সমন্বয়: যদিও বইটি নিয়ম মেনে চলার গুরুত্বকে তুলে ধরে, তবুও এটি স্বীকার করে যে কার্যকর লেখার জন্য কখনো কখনো নিয়মগুলোকে নমনীয়ভাবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন। লেখকদের নিয়মগুলি গভীরভাবে বুঝে পরিস্থিতি অনুযায়ী সেগুলো পরিবর্তন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সার্বিক প্রভাব
দ্য এলিমেন্টস অব স্টাইল বইটি একটি সময়হীন নির্দেশিকা হিসেবে প্রিয়, কারণ এটি সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য ফরম্যাটে লেখার নিখুঁত নিয়ম ও কৌশল উপস্থাপন করে। এর স্পষ্ট নিয়ম এবং ব্যবহারিক উদাহরণগুলি লেখকদের এমনভাবে প্রবন্ধ রচনা করতে সহায়তা করে যা শুধু সঠিকই নয়, বরং আকর্ষণীয় ও বোধগম্যও হয়। আপনি যদি একাডেমিক, পেশাদার বা সৃজনশীল লেখালেখির যেকোনো ধরণের কাজ করছেন, এই বইয়ের মূলনীতিগুলি আপনার বার্তা স্পষ্ট ও নিখুঁতভাবে পাঠাতে সাহায্য করবে।
এই সারাংশ বইটির মূল বার্তাটিকে তুলে ধরে: স্পষ্ট ও সরাসরি লেখা অর্জন করা যায় ভাষার যথাযথ ব্যবহার, বিস্তারিত মনোযোগ এবং সরলতার প্রতি প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে।
———————–
বইয়ের সংক্ষিপ্তসার: Writing Down the Bones: Freeing the Writer Within – নাতালি গোল্ডবার্গ
সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
নাতালি গোল্ডবার্গের Writing Down the Bones: Freeing the Writer Within হল একটি জনপ্রিয় লেখা-সংক্রান্ত বই, যেখানে লেখালেখির কৌশল, জেন দর্শন, এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ রয়েছে। ১৯৮৬ সালে প্রথম প্রকাশিত এই বইটি লেখকদের অনুপ্রাণিত করে লেখালেখিকে একটি নিয়মিত অনুশীলন হিসেবে গ্রহণ করতে, যা সৃজনশীলতাকে মুক্ত করে এবং আসল কণ্ঠ খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
মূল ভাবনা ও শিক্ষা:
১. লেখালেখি একটি চর্চা
গোল্ডবার্গ লেখালেখিকে ধ্যানের মতো একটি অনুশীলন হিসেবে দেখেন। তিনি “লেখার চর্চা” করতে বলেন, যেখানে একটি সময় নির্ধারণ করে নিরবচ্ছিন্নভাবে লেখা চালিয়ে যেতে হবে—কোনো রকম সম্পাদনা বা আত্ম-সমালোচনা ছাড়াই।
২. আত্মসমালোচনাকে অতিক্রম করা
অনেক লেখকই আত্ম-সন্দেহের কারণে তাদের সৃজনশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করেন। গোল্ডবার্গ এই অভ্যাসকে দূর করতে বলেন এবং লেখালেখিতে আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে উৎসাহ দেন।
৩. প্রথম ভাবনাগুলোর শক্তি
তিনি বলেন, লেখার সময় প্রথম যে ভাবনাগুলো আসে, সেগুলোকে গ্রহণ করতে হবে। বেশি চিন্তাভাবনা করলে সৃষ্টিশীলতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
৪. ইন্দ্রিয় ও অভিজ্ঞতা থেকে লেখা
ভালো লেখা আসে গভীর পর্যবেক্ষণ এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে। লেখাকে জীবন্ত করতে হলে আমাদের চারপাশের জগৎকে উপলব্ধি করা এবং তা সঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলা জরুরি।
৫. লেখালেখি ও জেন দর্শনের সংযোগ
জেন বৌদ্ধধর্মের শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, গোল্ডবার্গ লেখালেখিকে মনের উপস্থিতি (mindfulness) ও আত্মজিজ্ঞাসার একটি উপায় হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
৬. নিয়মিততা ও প্রতিশ্রুতি গুরুত্বপূর্ণ
লেখালেখিকে যদি একজন অভ্যাসে পরিণত করা যায়, তাহলে সৃজনশীলতা ধীরে ধীরে স্বাভাবিকভাবে বিকশিত হয়। তাই প্রতিদিন কিছু না কিছু লেখার অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
মূল শিক্ষা:
- প্রতিদিন নির্দ্বিধায় লিখুন, ভুল করার ভয় রাখবেন না।
- খসড়া লেখাগুলো অগোছালো হতেই পারে, সম্পাদনা পরবর্তী ধাপে আসবে।
- নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন এবং সত্যিকারের অভিজ্ঞতা থেকে লিখুন।
- চারপাশের জগতকে গভীরভাবে দেখুন ও অনুভব করুন, যা লেখার মধ্যে প্রাণসঞ্চার করবে।
- লেখালেখি কোনো গন্তব্য নয়, এটি একটি যাত্রা—তাই প্রক্রিয়াটি উপভোগ করুন।
এই বইটি কাদের জন্য?
যারা লেখালেখি শুরু করতে চান, আত্মবিশ্বাসী হতে চান, বা সৃষ্টিশীলতাকে আরও গভীরভাবে বুঝতে চান—তাদের জন্য এই বইটি আদর্শ। এটি কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক বা স্রেফ নিজের চিন্তা লিখতে চাওয়া যে কাউকে অনুপ্রাণিত করবে।