“Self-Editing for Fiction Writers” by Renni Browne and Dave King
অধ্যায় ১: প্রারম্ভ – কেন স্ব-সম্পাদনা গুরুত্বপূর্ণ
লেখকরা প্রথমেই ব্যাখ্যা করেন যে, স্ব-সম্পাদনা কেবল ভুল সংশোধনের বিষয় নয়; এটি আপনার রচনাকে আকর্ষণীয় ও পাঠযোগ্য করে তোলার জন্য একটি পরিমার্জন প্রক্রিয়া।
- পাঠকের অভিজ্ঞতা বোঝা: লেখকরা মনে করেন, লেখককে সর্বদা পাঠকের দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা দেখতে হবে। যদি কোনো বাক্য বা প্যারা অস্পষ্টতা সৃষ্টি করে বা গল্পের গতি কমিয়ে দেয়, তবে তা পুনর্লিখন করা প্রয়োজন।
- সম্পাদনা একটি শিল্প: স্ব-সম্পাদনা এমন একটি শিল্প যা অনুশীলনের মাধ্যমে শিখা যায়। লেখকদের কঠোর সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রিয় অংশগুলো কেটে ফেলার সাহসিকতা প্রদর্শনের পরামর্শ দেওয়া হয়।
- আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: সম্পাদনার ধাপে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। লেখকরা তাদের কণ্ঠস্বর স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে যখন তারা তাদের কাজকে বারবার পরিমার্জন করে।


অধ্যায় ২: আপনার গল্পকে চিনে নেয়া
এই অধ্যায়ে লেখকরা পরামর্শ দেন যে, লেখকদের তাদের কাজকে পাঠকের দৃষ্টিতে দেখার জন্য এক ধাপ পিছিয়ে দাঁড়াতে হবে।
- দূরত্ব বজায় রাখা: খসড়া থেকে বিরতি নেওয়া এবং পরে পুনরায় পড়া, তাজা চোখে ত্রুটি চিহ্নিত করার একটি কার্যকর পদ্ধতি।
- জোরে জোরে পড়া: লেখাটি জোরে পড়লে অস্বাভাবিক বাক্যাংশ, অসামঞ্জস্যপূর্ণ সুর ও গতি ইত্যাদি প্রকাশ পায়।
- প্রতিক্রিয়া গ্রহণ: যদিও স্ব-সম্পাদনা ব্যক্তিগত প্রক্রিয়া, বিশ্বস্ত বন্ধু বা সহলেখকদের মতামত নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে, যা অনেক সময় লেখকের চোখে অনাবদ্ধ ত্রুটি প্রকাশ করে।
এই কৌশলগুলো মূলত লেখাকে আরও সংগঠিত ও পাঠকের জন্য প্রাঞ্জল করার ভিত্তি গড়ে তোলে।
অধ্যায় ৩: অপ্রয়োজনীয় শব্দ বর্জন – অপ্রয়োজনীয় শব্দ বা বাক্যাংশ অপসারণ
এই অধ্যায়ে লেখকরা সংক্ষিপ্ততা ও প্রাসঙ্গিকতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।
- শব্দের অর্থবোধকতা: প্রতিটি শব্দের একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকা উচিত। অতিরিক্ত শব্দ বা বাক্যাংশ গল্পের প্রভাব কমিয়ে দেয়।
- সরলতা বনাম জটিলতা: লেখকের উচিত স্পষ্টতা বজায় রেখে অপ্রয়োজনীয় অলংকারিকতা থেকে বিরত থাকা। সরল বাক্য প্রায়শই জটিল বাক্যের চেয়ে শক্তিশালী প্রভাব ফেলে।
- ছাঁটাইয়ের কৌশল: দুর্বল ক্রিয়া ও বিশেষণ বদলে শক্তিশালী ও সুনির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সাধারণ অভিবাদন বা অতিরিক্ত ভরা বাক্যাংশগুলো পরিহার করতে বলা হয়েছে।
এই অধ্যায়টি লেখাকে ধারাবাহিক ও প্রাঞ্জল করে তোলার জন্য অপ্রয়োজনীয় উপাদানগুলো কেটে ফেলার প্রক্রিয়ার উপর জোর দেয়।
অধ্যায় ৪: “দেখাও” বনাম “বলো” কলা
গল্পকে প্রাণবন্ত ও পাঠকের সাথে সংযুক্ত রাখার জন্য “দেখাও” পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- দৃশ্যমান চিত্রাঙ্কন: লেখকরা পাঠকের মনের চোখে দৃশ্য ফুটিয়ে তোলার জন্য স্পষ্ট বর্ণনা ও ক্রিয়াকলাপের উপর জোর দেন।
- সক্রিয় বনাম নিস্ক্রিয় বাক্য গঠন: সক্রিয় বাক্য রচনায় তাত্ক্ষণিকতা ও উচ্ছ্বাস আসে, যেখানে নিস্ক্রিয় বাক্যগুলো প্রায়শই গল্পের প্রভাব দুর্বল করে।
- সমন্বিত ব্যবহার: যদিও “দেখাও” পদ্ধতি প্রাধান্য পায়, কখনও কখনও “বলো” পদ্ধতির প্রয়োজন হয়। লেখকরা পরামর্শ দেন, সংক্ষিপ্ত সারাংশ প্রদানের জন্য বলার পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই অধ্যায়ে উদাহরণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে কিভাবে সাধারণ বর্ণনাকে গতিশীল ও প্রাণবন্ত করে তোলা যায়।


অধ্যায় ৫: আপনার গদ্যকে শৃঙ্খলিত করা – বাক্য গঠন ও চিহ্নবিন্যাস
এই অধ্যায়ে লেখকেরা গদ্যের কাঠামো ও চিহ্নবিন্যাসের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
- বাক্যের বৈচিত্র্য: সংক্ষিপ্ত ও প্রভাবশালী বাক্যের সাথে দীর্ঘ ও জটিল বাক্য মিলিয়ে লেখায় গতি ও ছন্দ সৃষ্টি করা যায়।
- অতিরিক্ত বাক্য থেকে বিরত থাকা: দীর্ঘ বাক্য পাঠককে বিভ্রান্ত করে, তাই সেগুলোকে ভাগ করে স্পষ্ট অর্থ প্রদান করা উচিত।
- চিহ্নবিন্যাসের ভূমিকা: সঠিক কমা, সেমিকোলন ইত্যাদি ব্যবহার অর্থ স্পষ্ট করে এবং লেখকের সুরকে প্রাধান্য দেয়।
এই কৌশলগুলো রপ্ত করা গেলে লেখার গতি ও প্রভাব উন্নত করা যায়।
অধ্যায় ৬: “মি-টু” অনুচ্ছেদ বর্জন – অতিরিক্ত বিশেষণ ও ক্রিয়াবিশেষণ অপসারণ
এই অধ্যায়ে লেখকরা অতিরিক্ত বিশেষণ ও ক্রিয়াবিশেষণের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন যা লেখাকে দুর্বল করে ফেলে।
- বর্ণনা সরলীকরণ: অতিরিক্ত বর্ণনা ছাড়িয়ে, শক্তিশালী এবং নির্দিষ্ট নামপদ ও ক্রিয়া ব্যবহার করা উচিত।
- গুণগত মান বনাম পরিমাণ: বিশেষণগুলো যদি যথাযথ ও প্রাসঙ্গিকভাবে ব্যবহার করা হয়, তবে তা কার্যকর হতে পারে।
- পুনর্লিখনের কৌশল: “আগে ও পরে” উদাহরণ দিয়ে দেখানো হয়েছে যে, অপ্রয়োজনীয় শব্দ কাটলে বাক্য কিভাবে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
এখানে মূল বার্তা হলো, প্রতিটি বিশেষণ বা ক্রিয়াবিশেষণ লেখার মধ্যে তার যথার্থ স্থান রাখবে কিনা, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
অধ্যায় ৭: সংলাপের গতিশীলতা – স্পষ্টতা ও প্রভাবের জন্য সংলাপ সম্পাদনা
গল্পের সংলাপ পাঠকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে এবং চরিত্রের আবেগ ও সংঘর্ষ ফুটিয়ে তোলে।
- প্রাকৃতিক প্রবাহ: সংলাপ যেন স্বাভাবিক শোনায় তার জন্য লেখকদের সচেতন হতে হবে, যাতে তা অপ্রয়োজনীয়ভাবে বোঝাপড়ার জন্য না হয়।
- অতিরিক্ত ব্যাখ্যা থেকে বিরত থাকা: সংলাপে অতিরিক্ত ব্যাখ্যা বা তথ্য প্রদান না করে চরিত্রের মেজাজ ও সংঘর্ষ প্রকাশ করা উচিত।
- ট্যাগ ব্যবহারের নিয়ম: “বলল” বা “জানাল” এর মত সাধারণ ট্যাগ ব্যবহার করে অতিরিক্ত বর্ণনামূলক ট্যাগের থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- অন্তর্নিহিত বার্তা: সংলাপের মধ্যে সূক্ষ্ম প্রতিচ্ছবি থাকা উচিত যা পাঠককে চরিত্রের অন্তর্নিহিত আবেগ ও ভাবার্থ বোঝাতে সাহায্য করে।
এই অধ্যায়ে অনুশীলনের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে কিভাবে সংলাপকে আরও প্রাঞ্জল ও স্বাভাবিক করে তোলা যায়।
অধ্যায় ৮: দৃষ্টিভঙ্গি ও বর্ণনাত্মক পারস্পরিক সম্পর্ক
পয়েন্ট অব ভিউ (POV) বা দৃষ্টিভঙ্গির ধারাবাহিকতা গল্পের পাঠযোগ্যতা বজায় রাখতে অপরিহার্য।
- উপযুক্ত POV নির্বাচন: লেখকদের প্রথম ব্যক্তি, তৃতীয় ব্যক্তি সীমিত বা সর্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গির সুবিধা ও অসুবিধা তুলে ধরা হয়েছে এবং কিভাবে সঠিক বিকল্প বেছে নিতে হয় তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
- হেড-হপিং থেকে বিরত থাকা: এক দৃশ্যের মধ্যে একাধিক চরিত্রের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন পাঠকের জন্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে।
- গভীর দৃষ্টিভঙ্গি: গভীর তৃতীয় ব্যক্তি বা প্রথম ব্যক্তির ক্ষেত্রে, চরিত্রের অভ্যন্তরীণ ভাবনা ও অনুভূতিকে প্রাঞ্জলভাবে ফুটিয়ে তোলা প্রয়োজন, কিন্তু অতিরিক্ত অভ্যন্তরীণ মনন পাঠককে বিভ্রান্ত করতে পারে।
নিয়মিত ও ধারাবাহিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার মাধ্যমে গল্পের সারাংশ ও আবেগগত প্রভাব উন্নত করা সম্ভব।
অধ্যায় ৯: সংশোধনের প্রক্রিয়া – ধাপে ধাপে সম্পাদনার কৌশল
এই অধ্যায়ে স্ব-সম্পাদনার পুরো প্রক্রিয়াটিকে ধাপে ধাপে ভাগ করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।


- প্রথম ধাপ – কাঠামোগত সংশোধন: প্রথম পর্যায়ে গল্পের মূল কাঠামো, চরিত্রের বিকাশ, প্লটের সামঞ্জস্যতা ও গতি মূল্যায়ন করা হয়। এখানে দেখা হয়, প্রতিটি দৃশ্য কি সামগ্রিক গল্পের সঙ্গে খাপ খায় কিনা।
- দ্বিতীয় ধাপ – বাক্য পর্যায়ের পরিবর্তন: কাঠামো সঠিক হলে প্রতিটি বাক্যকে পরিমার্জন করে অস্পষ্টতা, পুনরাবৃত্তি ও অনাবশ্যক শব্দগুলো দূর করার কাজ করা হয়।
- তৃতীয় ধাপ – সংলাপ ও বিস্তারিত পরিবর্তন: সংলাপের স্বাভাবিকতা, সুর ও অতিরিক্ত বিশদের অপসারণে এই পর্যায়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
- চূড়ান্ত পঠন: সবশেষে একটি চূড়ান্ত পঠন করা হয় যাতে কোনো ত্রুটি থেকে না যায় এবং গল্পটি সাবলীলভাবে প্রবাহিত হয়।
এই অধ্যায়ে দেওয়া অনুশীলন ও চেকলিস্টগুলো লেখককে একটি সংগঠিত ও কার্যকরী পরিমার্জন প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
অধ্যায় ১০: সাধারণ সমস্যার মোকাবিলা
প্রতিটি লেখকের খসড়ায় সাধারণ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এই অধ্যায়ে ক্লিচে, অতিরিক্ত বর্ণনা ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ গল্পের বিষয়গুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উপায় প্রদান করা হয়েছে।
- ক্লিচে চিহ্নিতকরণ: পুরোনো ও প্রচলিত বাক্যাংশ থেকে দূরে থেকে নতুন ও মৌলিক উপায়ে বিষয়বস্তু প্রকাশের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- ব্যাখ্যার ভারসাম্য: অতিরিক্ত ব্যাখ্যা বা অভ্যন্তরীণ মননের ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। গল্পের প্রবাহ বজায় রাখতে ব্যাকস্টোরি বা অতিরিক্ত তথ্য যেন না জটিলতা সৃষ্টি করে, তার দিকেও মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।
- তান ও গতি বজায় রাখা: ক্রিয়া, সংলাপ ও বর্ণনার মধ্যে সঠিক সমন্বয় রাখতে লেখককে বিভিন্ন বাক্যের দৈর্ঘ্য ও অপ্রয়োজনীয় বিশদ বিবরণ কেটে ফেলার কৌশল শেখানো হয়েছে।
- সঙ্গতি রক্ষা: চরিত্রের কণ্ঠস্বর বা গল্পের সুর যেন প্রতিটি অংশে একই থাকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই অধ্যায়ে লেখকেরা তাদের খসড়ায় সমস্যা সনাক্ত করে কার্যকর সমাধানের কৌশল শিখতে পারে।
অধ্যায় ১১: কণ্ঠস্বর ও শৈলীর ভূমিকা
একটি অনন্য কণ্ঠস্বর একজন লেখকের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। এই অধ্যায়ে স্ব-সম্পাদনার মাধ্যমে সেই কণ্ঠস্বর ও শৈলী কীভাবে নিখুঁত করা যায়, তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
- নিজস্ব কণ্ঠস্বর খুঁজে পাওয়া: অন্য লেখকদের অনুকরণ না করে, লেখকদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গী ও অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিয়ে তা ফুটিয়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- স্পষ্টতার সঙ্গে সঙ্গতি বজায় রাখা: শক্তিশালী কণ্ঠস্বর থাকা সত্ত্বেও তা স্পষ্টতা থেকে বিচ্যুত না হয়ে লেখার মূল বক্তব্যকে সমর্থন করতে হবে।
- শৈলী – একটি সরঞ্জাম: অতিরিক্ত অলংকৃত শৈলী পাঠকের কাছে অর্থকে অস্পষ্ট করে তুলতে পারে। শৈলী এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে যা গল্পকে সমৃদ্ধ করে, জটিল করে না।
- সুর ও টোনের সামঞ্জস্য: লেখার সুর, হাস্যকর থেকে গম্ভীর, যেন ধারাবাহিক থাকে—এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য পুনরায় পড়ার মাধ্যমে সংশোধনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা প্রয়োজন।
এখানে লেখকরা শিখেছেন, কিভাবে কণ্ঠস্বর ও শৈলী ঠিক রেখে লেখাকে আরও প্রাঞ্জল ও ব্যক্তিগত করে তোলা
অধ্যায় ১২: ব্যবহারিক স্ব-সম্পাদনা অনুশীলন ও চেকলিস্ট
সিদ্ধান্তমূলক তত্ত্বকে বাস্তবে রূপান্তর করার জন্য এই অধ্যায়ে বিভিন্ন অনুশীলন ও চেকলিস্ট প্রদান করা হয়েছে।
- প্রতিটি বাক্যের বিশ্লেষণ: প্রতিটি বাক্যকে তার উদ্দেশ্য, স্পষ্টতা ও প্রভাব অনুযায়ী বিশ্লেষণ করার জন্য প্রশ্নসমূহের একটি চেকলিস্ট প্রদান করা হয়েছে, যেমন “এই বাক্যটি কি ‘দেখাও’ পদ্ধতিতে লেখা?” বা “প্রতিটি শব্দ কি অপরিহার্য?”
- অনুচ্ছেদ পর্যায়ের সংশোধন: একাধিক বাক্য মিলিয়ে অনুচ্ছেদের গঠন, সুর ও সংহতি যাচাই করার জন্য লেখকদের অনুশীলনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
- দৃশ্য মূল্যায়ন: দীর্ঘ অনুচ্ছেদ বা দৃশ্যগুলোকে বিশ্লেষণ করে দেখা উচিত, সেই দৃশ্য কি গল্পের চরিত্র বা প্লটকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কিনা।
- সংশোধন রুটিন: লেখকদের নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে নিবিড়ভাবে স্ব-সম্পাদনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা পুরো প্রক্রিয়াটিকে সুসংগঠিত করে।
এই ব্যবহারিক সরঞ্জামগুলো স্ব-সম্পাদনার প্রক্রিয়াকে কম ভীতিকর করে এবং ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখায়।
অধ্যায় ১৩: চূড়ান্ত ভাবনা – প্রক্রিয়াকে গ্রহণ করা
শেষ অধ্যায়ে লেখকরা বইয়ের মূল পাঠগুলোকে একত্র করে জানান যে, স্ব-সম্পাদনা কোনও ব্যর্থতার চিহ্ন নয়, বরং লেখকের বিকাশের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
- ধৈর্য্য ও অধ্যবসায়: লেখকেরা বার বার সংশোধনের মধ্য দিয়ে গেলে নিজেকে আরও দক্ষ করে তুলতে পারেন, এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে।
- লেখকের বিকাশ: স্ব-সম্পাদনাকে নিজেকে ও গল্পকে আরো উন্নত করার একটি উপায় হিসেবে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- নিজস্ব কণ্ঠস্বরের প্রতি আত্মবিশ্বাস: লেখকরা যদি নিজেদের স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বরকে বিশ্বস্তভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম হন, তবে তাদের লেখা আরও প্রাঞ্জল ও প্রভাবশালী হয়ে ওঠে।
এই অধ্যায়টি পাঠকদের উৎসাহিত করে, স্মরণ করিয়ে দেয় যে—সংশোধন প্রক্রিয়াকে গ্রহণ করা মানে গল্পের প্রতি গভীর প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করা।
উপসংহার
“Self-Editing for Fiction Writers” বইটি কেবল ব্যাকরণ বা চিহ্নবিন্যাস সংশোধনের গাইড নয়; এটি একটি ব্যাপক নির্দেশিকা যা লেখকদের নিজেদের কাজের প্রতি সমালোচনামূলক কিন্তু গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
- পাঠকের অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে: প্রতিটি অধ্যায় পাঠকের অভিজ্ঞতা, অপ্রয়োজনীয় শব্দ কেটে ফেলা, সংলাপের স্বচ্ছতা, দৃষ্টিভঙ্গির ধারাবাহিকতা, এবং বাক্য-স্তরের পরিমার্জনের উপর জোর দেয়।
- লেখন কৌশলের উন্নতি: প্রতিটি অধ্যায়ে প্রদত্ত কৌশল, অনুশীলন ও চেকলিস্ট লেখকদের তাদের খসড়াকে একটি সমন্বিত, প্রাঞ্জল ও আকর্ষণীয় রূপ দিতে সাহায্য করে।
- লেখকের আত্মউন্নয়ন: স্ব-সম্পাদনা কেবল লেখার ভুল সংশোধন নয়, এটি লেখকের ব্যক্তিগত ও পেশাগত বিকাশের একটি অংশ, যা শেষ পর্যন্ত লেখার গুণগত মান উন্নত করে।
বইটি লেখকদের শেখায়, কিভাবে প্রতিটি শব্দ, বাক্য ও অনুচ্ছেদকে পরিমার্জন করে একটি পূর্ণাঙ্গ, স্পষ্ট এবং পাঠকের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী গল্প তৈরি করা যায়। প্রতিটি ধাপ—পাঠকের অভিজ্ঞতা বোঝা, অপ্রয়োজনীয় উপাদান অপসারণ, সংলাপের প্রাঞ্জলতা বজায় রাখা, এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঠিকতা নিশ্চিত করা—সবই মিলিয়ে একটি চূড়ান্ত ও প্রভাবশালী লেখাকে রূপ দেয়।
এই বিস্তারিত, অধ্যায়ক্রমিক সারাংশটি বইটির মূল বিষয়গুলোকে সমন্বিতভাবে তুলে ধরে, যা নতুন বা অভিজ্ঞ লেখকদের জন্য তাদের গল্পকে পরিমার্জন ও উন্নত করার এক কার্যকরী সহায়িকা হিসেবে কাজ করবে। লেখকেরা যখন এই কৌশলগুলোকে তাদের রচনায় প্রয়োগ করবেন, তখন বুঝতে পারবেন যে—স্ব-সম্পাদনা শুধুমাত্র ভুল সংশোধনের কাজ নয়, এটি লেখকের নিজের কণ্ঠস্বর ও সৃজনশীলতা আরো স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলার এক অবিচ্ছেদ্য উপায়।