৩০. অভিনয়ের নির্দেশনা ও পরিচালনা
অভিনেতাদের প্রস্তুতি
- শুটিংয়ের আগে অভিনেতারা স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করেন, চরিত্র নিয়ে ভাবেন, কখনো ওয়ার্কশপ বা রিহার্সালে অংশ নেন।
- সেটে আসার আগে মেকআপ, পোশাক, প্রপস ইত্যাদি ঠিক করে নিতে হয়।
অভিনয় নির্দেশনা (Directing Actors)
- পরিচালক বা সহকারী পরিচালক দৃশ্যের প্রেক্ষাপট, চরিত্রের মানসিক অবস্থা ও প্রয়োজনীয় আবেগ অভিনেতাদের বোঝান।
- কখনো কোনো দৃশ্য নিয়ে বেশি রিহার্সাল করতে হতে পারে, আবার কখনো নির্মাতারা স্বতঃস্ফূর্ততা বজায় রাখতে কম রিহার্সাল করেন।
- সংলাপ বলার সময় উচ্চারণ, ভয়েস মড্যুলেশন, দেহভঙ্গি—সব কিছুই পরিচালক লক্ষ রাখেন।
রিহার্সাল ও ব্লকিং (Blocking)
- শুটিংয়ের আগে রিহার্সালে চরিত্রের অবস্থান, মুভমেন্ট, দৃষ্টিকোণ (Eyeline) ইত্যাদি নির্ধারণ করে নেওয়া হয়।
- ক্যামেরার কোন অ্যাঙ্গেল থেকে দৃশ্য ধারণ করা হবে, সেটা নিশ্চিত করে অভিনেতাদের সাথে মেলানো হয়।
- ব্লকিং ঠিকমতো না জানলে শুটিংয়ে সময় ও পরিশ্রম অপচয় হয়।



৩১. ডায়লগ রেকর্ডিং ও সাউন্ড ক্যাপচার
লাইভ সাউন্ড রেকর্ডিং
- সাধারণত দৃশ্য ধারণের সময়ই বুম মাইক্রোফোন বা ল্যাভালিয়ার (Lavalier) মাইক্রোফোন ব্যবহার করে সংলাপ রেকর্ড করা হয়।
- আশেপাশে যদি অতিরিক্ত শব্দ বা ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ থাকে, সাউন্ড টেকনিশিয়ান তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন (যেমন – ডিম্বাকৃতি রিফ্লেক্টর, দিক নির্ধারিত মাইক্রোফোন ইত্যাদি)।
- লাইভ সাউন্ড যত ভালোভাবে রেকর্ড করা যায়, পোস্ট-প্রোডাকশনে সম্পাদনার ঝামেলা তত কমে।
ADR (Automated Dialog Replacement)
- কোনো কারণে লাইভ সাউন্ডে উচ্চমান বজায় রাখা সম্ভব না হলে (যেমন অপ্রত্যাশিত শব্দ, মাইক সমস্যা) পরবর্তীতে স্টুডিওতে ডাবিং বা ADR করে ডায়লগ পুনরায় রেকর্ড করা হয়।
- অভিনেতারা বড় পর্দায় নিজেদের দৃশ্য দেখে সেই অনুযায়ী সংলাপ মিলিয়ে বলেন।
- সঠিক লিপ-সিঙ্ক (Lip-sync) বজায় রাখতে কিছুটা অনুশীলন প্রয়োজন।
অ্যাম্বিয়েন্ট সাউন্ড ও ফোলে আর্ট
- শুটিংয়ের সময় লোকেশনের স্বাভাবিক পরিবেশের শব্দ (Room Tone/Ambient Sound) রেকর্ড করা হয়, যাতে পোস্ট-প্রোডাকশনে দৃশ্যের পটভূমিতে প্রাকৃতিক আবহ দেওয়া যায়।
- ফোলে আর্টের জন্য অনেক সময় আলাদা সেট-আপে দরজার কটিকট শব্দ, কাপড়ের ঘর্ষণ, পদশব্দ, হাতাহাতির আওয়াজ ইত্যাদি নতুন করে রেকর্ড করা হয়।
৩২. ভিএফএক্স ও স্পেশাল এফেক্টস ব্যবহারের কৌশল
প্র্যাকটিক্যাল এফেক্টস (Practical Effects)
- শারীরিকভাবে বাস্তবে যে ইফেক্ট তৈরি করা যায় তা-ই প্র্যাকটিক্যাল এফেক্ট (যেমন ধোঁয়া, আগুন, বিস্ফোরণ, রক্তের ছিটা, প্রস্থেটিক মেকআপ ইত্যাদি)।
- বাস্তব নির্মাণ বেশি বিশ্বাসযোগ্য অনুভূতি দেয়, কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি কঠোরভাবে মেনে চলতে হয়।
গ্রিন স্ক্রিন ও সিজিআই (CGI)
- ভবিষ্যৎ দৃশ্য বা কাল্পনিক পরিবেশ দেখাতে, বিপদজনক অ্যাকশন সিকোয়েন্সের জন্য অনেক সময় গ্রিন স্ক্রিন ব্যবহার করা হয়।
- পরে পোস্ট-প্রোডাকশনে কম্পিউটার গ্রাফিক্সের (CGI) মাধ্যমে পটভূমি বা অ্যাডিশনাল এলিমেন্ট যোগ করা হয়।
- ফ্যান্টাসি, সায়েন্স ফিকশন, সুপারহিরো ফিল্ম—এসব ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে গ্রিন স্ক্রিন ও সিজিআই-র ব্যবহার দেখা যায়।



মার্কার ও রেফারেন্স ব্যবহার
- শুটিংয়ের সময় দৃশ্যের মধ্যে বিশেষ মার্কার বা রেফারেন্স বসিয়ে রাখা হয় যাতে পোস্ট-প্রোডাকশনে সিজিআই যুক্ত করা সহজ হয়।
- অভিনেতাকে তখন কল্পনা করে অভিনয় করতে হয় যে তাদের সামনে কোনো দানব বা স্পেসশিপ আছে, যদিও বাস্তবে কিছু নেই।
উপসংহার
এই পর্বের সারমর্ম
- প্রোডাকশনে আসলেই ছবির প্রাণ সঞ্চারিত হয়। পূর্বপ্রস্তুতি অনুযায়ী সেটে পরিচালক ও কলাকুশলীরা একসঙ্গে কাজ করে চিত্রনাট্যকে বাস্তবে রূপ দেন।
- অভিনয় নির্দেশনা, ক্যামেরা ও লাইটের সঠিক ব্যবহার, সাউন্ড রেকর্ডিং, নিরাপত্তা বিধান—সব দিক সামলে একজন নির্মাতা ও তার টিম এগিয়ে যান কাঙ্ক্ষিত ফলের দিকে।
- ভিএফএক্স ও স্পেশাল এফেক্টস ব্যবহারের সিদ্ধান্তগুলোও অনেকটা শুটিং সময় নির্দিষ্ট হয়, যাতে পরে পোস্ট-প্রোডাকশনে বাড়তি সমস্যা না হয়।
৩৩. সম্পাদনার ভূমিকা ও গুরুত্ব
সম্পাদনার সংজ্ঞা
- শুটিংয়ের সময় ধারণ করা নানান শট ও দৃশ্যকে সঠিক ক্রমে সাজিয়ে গল্পকে চূড়ান্ত আকার দেওয়ার প্রক্রিয়াই চলচ্চিত্র সম্পাদনা।
- নির্মাতার দৃষ্টিভঙ্গি ও গল্পের প্রয়োজন অনুযায়ী ছাঁটাই, সংযোজন ও পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে দর্শকের কাছে সিনেমাটির রূপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
সম্পাদনার গুরুত্ব
- গল্পের গতি (Pacing): সঠিক সময়ে কাট ও দৃশ্যান্তর সিনেমার গতি ও প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। খুব ধীরগতি হলে দর্শক ক্লান্ত হতে পারে, আবার খুব দ্রুত কাটে গল্পের আবেগ ঠিকমতো প্রকাশ পায় না।
- নিরবচ্ছিন্নতা (Continuity): বিভিন্ন দৃশ্যকে সাবলীলভাবে সংযুক্ত করে নিরবচ্ছিন্ন গল্প-প্রবাহ বজায় রাখতে হয়।
- আবেগ জাগানো: সঠিকভাবে দৃশ্য পরপর সাজিয়ে চরিত্রের আবেগ ও দ্বন্দ্বকে জোরালোভাবে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব।
- তথ্য নিয়ন্ত্রণ: গল্পের কোন অংশ কখন প্রকাশ পাবে, দর্শককে কীভাবে রহস্য ও উত্তেজনা দেওয়া হবে—এইসব সূক্ষ্ম বিষয় সম্পাদনার উপর নির্ভরশীল।
৩৪. ফিল্ম এডিটিং সফটওয়্যার
পোস্ট-প্রোডাকশনে প্রচলিত কিছু জনপ্রিয় সফটওয়্যার ও তাদের বৈশিষ্ট্য:
- Adobe Premiere Pro
- বহুল ব্যবহৃত ও বহুমুখী ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।
- সিনেমা, টিভি অনুষ্ঠান, ইউটিউব কনটেন্ট ইত্যাদির জন্য উপযোগী।
- After Effects, Photoshop-এর মতো অন্যান্য অ্যাডোবি অ্যাপের সঙ্গে সহজেই ইন্টিগ্রেট করা যায়।
- DaVinci Resolve
- মূলত কালার কারেকশন ও কালার গ্রেডিংয়ের জন্য বিখ্যাত, তবে সম্পূর্ণ এডিটিং ও পোস্ট-প্রোডাকশন স্যুট হিসেবেও কাজ করে।
- বিনামূল্যে (Free) এবং পেইড (Studio) দুটি সংস্করণ পাওয়া যায়।
- ভিএফএক্স ও সাউন্ড ডিজাইনের জন্যও বিল্ট-ইন টুলস আছে।
- Final Cut Pro (Apple)
- ম্যাক ব্যবহারকারীদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়।
- সহজ ইন্টারফেস এবং দ্রুত রেন্ডারিং পারফরম্যান্সের জন্য প্রশংসিত।
- বড় পর্দার ফিচার ফিল্ম থেকে শুরু করে ছোটখাট ভিডিও প্রোজেক্ট—সবকিছুই এডিট করা যায়।
- Avid Media Composer
- পেশাদার ফিল্ম ও টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহৃত একটি প্রতিষ্ঠিত নাম।
- বড় প্রজেক্ট হ্যান্ডেল করার সক্ষমতা থাকায় অনেক প্রফেশনাল স্টুডিওতে ব্যবহৃত হয়।
বেশি গুরুত্বপূর্ণ কী?
- কোনো সফটওয়্যারই এককভাবে “সেরা” নয়; আপনার প্রোজেক্টের ধরন, বাজেট, কর্মপ্রবাহ এবং ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্যের ওপর নির্ভর করে সফটওয়্যার নির্বাচন করা উচিত।
৩৫. কাটিং ও ট্রানজিশনের ধরন
কাটিং (Cutting)
- দুটি শটকে একসঙ্গে সংযুক্ত করার সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি হল “কাট।”
- নির্দিষ্ট দৃশ্যের আবেগ, গতি ও গল্পের প্রয়োজন বুঝে কোথায় ও কখন কাট দেওয়া হবে—এটাই এডিটরের প্রধান দক্ষতা।
কাটিংয়ের ধরন
- স্ট্রেইট কাট (Straight Cut): সবচেয়ে সাধারণ ও প্রচলিত পদ্ধতি; কোনো অতিরিক্ত ট্রানজিশন ছাড়াই সরাসরি পরবর্তী শটে যাওয়া।
- ল–컷 (L-Cut) ও জে–কাট (J-Cut): সংলাপ বা সাউন্ড এক শট থেকে আগেই বা পরে ক্রস করে পরের শটে সংযুক্ত হয়। গল্পের ফ্লো ও আবেগ মসৃণ রাখতে কার্যকর।
- জাম্প কাট (Jump Cut): একই দৃশ্যের মধ্যেই হঠাৎ সময় বা অ্যাকশনে লাফ দেওয়া। উদাহরণ: কোনো চরিত্রের ভাবনার ভেতর দিয়েও জাম্প কাট দেখানো যায়।
- ম্যাচ কাট (Match Cut): শটের বিষয় বা মুভমেন্ট এক শট থেকে অন্য শটে নির্বিঘ্নে মিলিয়ে দেওয়া হয়, যাতে ভিজ্যুয়াল ও কনটেক্সট বজায় থাকে।



ট্রানজিশন (Transition)
- ফেড ইন/ফেড আউট (Fade In/Out): সাধারণত দৃশ্যের শুরু বা শেষে ধীরে ধীরে উজ্জ্বল বা অন্ধকার হওয়া।
- ডিজলভ (Dissolve): এক শটের ইমেজ ধীরে ধীরে আরেক শটের সঙ্গে মিশে যায়। সময়ের পরিবর্তন বা স্মৃতি ইত্যাদি বোঝাতে ব্যবহার হয়।
- ওয়াইপ (Wipe): এক শটকে ধীরে ধীরে আরেক শটের ওপর দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। কিছুটা “স্টাইলাইজড” ফিল দেয়।
৩৬. কালার গ্রেডিং ও কালার কারেকশন
কালার কারেকশন (Color Correction)
- শুটিংয়ের সময় আলো, ক্যামেরা সেটিংস বা লোকেশন ভেদে ভিডিওর রঙ ও উজ্জ্বলতায় পার্থক্য দেখা যেতে পারে।
- কালার কারেকশনের মাধ্যমে প্রতিটি শটকে গল্পের প্রয়োজনমতো স্বাভাবিক বা মানানসই রঙেরCloser একটি মানে আনা হয়, যাতে টোনে সামঞ্জস্য বজায় থাকে।
কালার গ্রেডিং (Color Grading)
- গল্পের মুড, আবেগ বা পরিবেশ ফুটিয়ে তুলতে ইচ্ছাকৃতভাবে রঙ ও কনট্রাস্টে পরিবর্তন আনা হয়।
- রোমান্টিক দৃশ্যে উষ্ণ ও উজ্জ্বল টোন ব্যবহার করা হতে পারে, আবার থ্রিলার দৃশ্যে নীলচে বা সবুজাভ ঠান্ডা টোন দেয়া যেতে পারে।
- সিনেমাটোগ্রাফি থেকে শুরু করে চূড়ান্ত আউটপুট পর্যন্ত “ভিজ্যুয়াল লুক” নির্ধারণ করতে কালার গ্রেডিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
টুলস ও প্লাগইন
- DaVinci Resolve কালার গ্রেডিং-এর জন্য বিখ্যাত। Premiere Pro ও Final Cut Pro-তেও লুমেট্রি কালার/কালার বোর্ড ব্যবহার করে গ্রেডিং করা যায়।
- অনেক সময় বিশেষ থার্ড-পার্টি প্লাগইন (যেমন FilmConvert, Magic Bullet Looks ইত্যাদি) ব্যবহার করে ফিল্ম লুক বা নির্দিষ্ট স্টাইল যুক্ত করা হয়।
৩৭. ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ও আবহসংগীত
ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর (Background Score)
- দৃশ্যের আবেগ ও ছন্দ বাড়াতে পেছনে বাজে ইনস্ট্রুমেন্টাল সুর বা মিউজিক।
- চরিত্রের মানসিক অবস্থা, দৃশ্যের টেনশন, রোমান্স, বা অ্যাকশনকে আরও উজ্জীবিত করে তোলে।
আবহসংগীত (Ambient Music/Soundscape)
- কখনো নির্দিষ্ট বাদ্যযন্ত্রের বদলে পরিবেশের সাথে মানানসই সাউন্ডস্কেপ বা আবহসংগীত ব্যবহৃত হয়, যা সুর ও শব্দের মিশ্রণে তৈরি হতে পারে।
- উদাহরণ: হরর দৃশ্যে ফিসফিসে বাতাসের শব্দ, ধ্রুপদী সুর ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় আতঙ্ক বা রহস্যের পরিবেশ নির্মাণে।
সংগীত নির্বাচন
- কিছু নির্মাতা স্বতন্ত্র কম্পোজারের কাছে সুর তৈরি করান; আবার কেউ রেডি-মেড লাইব্রেরি থেকে সংগ্রহ করেন (যেমন Artlist, Epidemic Sound ইত্যাদি)।
- গল্পের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক সুর নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভুল বা বেমানান সুর দর্শকের অনুভূতিকে বিভ্রান্ত করতে পারে।
৩৮. ডাবিং ও সাউন্ড ডিজাইন
ডাবিং (Dubbing) বা ADR
- শুটিংয়ের সময় যদি সংলাপ যথেষ্ট পরিষ্কারভাবে রেকর্ড করা না যায়, বা উচ্চারণ/ভাষায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন পড়ে, তখন স্টুডিওতে ডাবিং করা হয়।
- অভিনেতারা দৃশ্য দেখে দেখে সিনক্রোনাইজ করে সংলাপ বলেন, যাকে ADR (Automated Dialogue Replacement) বলে।



সাউন্ড ডিজাইন
- সংলাপ, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, অ্যাম্বিয়েন্ট সাউন্ড ছাড়া ফোলে আর্ট (Foley) ও স্পেশাল সাউন্ড এফেক্ট যোগ করে একটি দৃশ্যকে বাস্তবসম্মত বা নাটকীয় করা হয়।
- দরজার কটিকট শব্দ, পায়ের আওয়াজ, বাতাস, বৃষ্টির ঝাপটা—সবকিছুই আলাদাভাবে রেকর্ড ও মিক্স করে দৃশ্যে যুক্ত করা হয়।
- সাউন্ড ডিজাইনার দৃশ্যের আবেগ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী শব্দের তীব্রতা, টাইমিং ও ব্যালান্স ঠিক করেন।
৩৯. সাবটাইটেল ও ভিজ্যুয়াল এফেক্ট সংযোজন
সাবটাইটেল (Subtitle) বা Closed Captions
- আন্তর্জাতিক বা ভিন্ন ভাষাভাষী দর্শকের জন্য সাবটাইটেল যোগ করা জরুরি হতে পারে।
- বর্তমান ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে (Netflix, Amazon Prime ইত্যাদি) সাবটাইটেল ও ক্লোজড ক্যাপশন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক পর্যায়ে চলে গেছে।
- সঠিক বানান, টাইম কোড ও সংক্ষেপিত সংলাপের মাধ্যমে সাবটাইটেল লেখা হয়, যাতে দর্শক সহজে পড়তে পারে।
ভিজ্যুয়াল এফেক্ট সংযোজন (VFX Integration)
- শুটিংয়ের সময় গ্রিন স্ক্রিন বা ব্লু স্ক্রিন ব্যবহার করে যা ধারণ করা হয়েছিল, সেটির জায়গায় প্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড বা সিজিআই এলিমেন্ট যুক্ত করা হয়।
- সায়েন্স ফিকশন, অ্যাকশন, সুপারহিরো মুভিতে পোস্ট-প্রোডাকশনে ব্যাপক CGI ব্যবহার হয়।
- 2D বা 3D অ্যানিমেশন, ডিজিটাল ম্যাট পেইন্টিং, মোশন ট্র্যাকিং ইত্যাদি করে বাস্তবে অসম্ভব দৃশ্যও পর্দায় জীবন্ত হয়ে ওঠে।
- পোস্ট-প্রোডাকশনে শুটিংয়ের সময় ধারণ করা দৃশ্যগুলিকে সংগঠিত ও সাজিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সিনেমায় রূপ দেওয়া হয়।
- এডিটিং, কালার গ্রেডিং, সাউন্ড ডিজাইন, আবহসংগীত—প্রত্যেকটি স্তরেই নিখুঁতভাবে কাজ করতে হয়, কারণ এ পর্যায়েই গল্পকে তার চূড়ান্ত আকার দেওয়া সম্ভব হয়।
- ভিএফএক্স বা গ্রাফিক্স দরকার হলে এই সময়েই যুক্ত করা হয়, সাবটাইটেল যোগ করা হয় এবং সবকিছু সমন্বয় করে চূড়ান্ত আউটপুট তৈরি করা হয়।